• ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাগলা মসজিদের দান বাক্সে মিলল ঋণগ্রস্থ বাবার বেকার সন্তানের চিঠি

ডেস্ক
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১০, ২০২৩, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ণ
পাগলা মসজিদের দান বাক্সে মিলল ঋণগ্রস্থ বাবার বেকার সন্তানের চিঠি
সংবাদটি শেয়ার করুন....

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের দান বাক্স খোলা হয় প্রতি তিনমাস অন্তর অন্তর। সেখানে প্রতিবারই পাওয়া যায় কোটি কোটি নগত টাকাসহ স্বর্ণালংকার, বিদেশি মুদ্রা। তবে দান করতে আসা মানুষজন আল্লাহর উদ্দেশ্যে অনেকসময় লিখে যান মনের কথা। এবারো এমনি একটি চিঠি পাওয়া গেছে। যেখানে এক ঋণগ্রস্থ বাবার বেকার সন্তানের আকুতি দেখা যায় চিঠিতে।

রোববার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ৯টি সিন্দুকের তালা খোলা হলে সেখানে এক সিন্দুকের ১০০ টাকার এক নোটের সঙ্গে পিন করা ওই চিঠিটির দেখা মেলে।

পটুয়াখালি জেলার গলাচিপা উপজেলার আতিক নামের এক ব্যক্তি ওই চিঠি দেয় পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে।

চিঠিতে আতিক লিখে, তার বাবা বিশাল অংকের ব্যাংকলোন ও সুদের টাকা নেওয়ায় সেই ঋণে জর্জরিত। বর্তমানে মহাজনদের চাপে তাদের বসবাস করাই দায় হয়ে উঠছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য পাগলা মাসজিদের ১০০ টাকা দান করেছে। সেই সঙ্গে একটি প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরির প্রত্যাশা তার। আতিক তার চিঠিতে জানায় বাকি জীবন সে তার বাবা-মার সেবা করে কাটাতে চায়।

যা লেখা ছিল আতিকের চিঠিতে:

‘হে মহান আল্লাহ পাক, আমার প্রিয় সাধক পাগলা বাবার মসজিদের খ্যাতি শুনে দূরের জেলা পটুয়াখালীর গলাচিপা থেকে একাই এসেছি। আপনি অন্তর্যামী। সবই দেখেন ও জানেন। আমার বাবা মো. কুদ্দুসুর রহমান, মাতা উম্মে কুলসুম, বোন আফিফা রহমান। আমি মো. আতিকুর রহমান। আমার বাবার ব্যাংক লোন ১৬ লক্ষ টাকার উপরে। ব্যক্তিগত সুদী ঋণ ১০ লক্ষ টাকার উপরে। সুদখোরদের অত্যাচারে বাসায় থাকা বা চাকরি, পড়ালেখায় মন দেওয়া খুবই কঠিন। আমার বাবা অসহায় একজন মানুষ। নিজে ঋণ করে তার বোনদের ভাইদের পড়াশুনা ও বিয়ের খরচ চালিয়েছে। এখন তাকে সাহায্য করার কেউ নেই আল্লাহ তুমি ব্যতিত। পাগলা মসজিদে মাত্র ১০০ টাকা দান করলাম। আল্লাহ ও আল্লাহ রাসুলের উচিলায় ও পাগলা বাবার উচিলায় ঋণ ও গজব থেকে মুক্তির সুযোগ দাও। আমাকে প্রথম শ্রেণির সরকারি একটি চাকরি দাও। মা বাবার খেদমত করার সুযোগ দাও। আমাদের বালা মুচিবত পাগলা বাবার উচিলায় দূর করে দাও।ইতি আতিক, গলাচিপা, পটুয়াখালি’

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এবং কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলে ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছে। গননা শেষে টাকার অংক ছাড়িয়ে যায় বিগত দিনের সকল রেকর্ড। এবার ৩ মাস ২০ দিন পর দান সিন্দুকে মিলে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা। এতে প্রায় ২২০ জনের একটি দল অংশ নেয়।

চলতি বছরের ১৯ আগস্ট মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ২৩ বস্তায় ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল।