আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কেন্দ্র কমানোর পরামর্শ থাকলেও আগামী সংসদ নির্বাচনে দেশে ভোটকেন্দ্র বাড়ছে দুই হাজারের বেশি। গত সংসদ নির্বাচনের তুলনায় ৫ শতাংশের বেশি কেন্দ্র বাড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
বুধবার (১৬ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করবে ইসি।
ইসির ১০টি অঞ্চলের মধ্যে এবার কুমিল্লা অঞ্চলে কেন্দ্র বাড়ছে বেশি। এ অঞ্চলে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে সবচেয়ে কম বাড়ছে সিলেট অঞ্চলে। এখানে দুই শতাংশ কেন্দ্র বাড়ছে।
জানা গেছে, সারাদেশে স্থানীয় পর্যায় দাবি-আপত্তির জন্য এ খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যা নির্বাচন কমিশনের সচিবালয় থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বয় করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি, যোগাযোগব্যবস্থা ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্র বাড়ছে। দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে এই সংখ্যা আরও কম-বেশি হতে পারে।
ইসির হাতে আসা সমন্বিত তালিকা সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৪০ হাজার ১৮৩টি কেন্দ্র থেকে বেড়ে এ সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৪২ হাজার ৪০০টির মতো। এক্ষেত্রে মোট কেন্দ্র বাড়ছে দুই হাজারের কিছু বেশি।
ভোটকেন্দ্র বাড়ার পাশাপাশি ভোটকক্ষও বাড়ছে। গত নির্বাচনের সময়কার দুই লাখ সাত হাজার ৩৯৯ ভোট কক্ষ থেকে বেড়ে এবার দুই লাখ ৬১ হাজার ৫০০ হতে পারে। এক্ষেত্রে কেন্দ্র বাড়ছে ২৬ শতাংশ।
অবশ্য নির্বাচন কমিশন থেকে যে সমন্বিত তালিকা পাওয়া গেছে, তাতে কিছু হেরফের হতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইসির ১০টি অঞ্চলের মধ্যে এবার কুমিল্লা অঞ্চলে কেন্দ্র বাড়ছে বেশি। এ অঞ্চলে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অঞ্চলে একাদশের চার হাজার ২৯৪টি কেন্দ্র থেকে বেড়ে হচ্ছে চার হাজার ৭০০টির মতো কেন্দ্র। সব চেয়ে কম বাড়ছে সিলেট অঞ্চলে। সেখানে একাদশের দুই হাজার ৮০৫টি কেন্দ্র থেকে বেড়ে হচ্ছে দুই হাজার ৮০০ (২ শতাংশ)।
এদিকে বুধবার প্রকাশিত খসড়া কেন্দ্রের ওপর দাবি-আপত্তি নেওয়ার শেষ তারিখ ৩১ আগস্ট। এসব দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর এবং খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করতে হবে ১৭ সেপ্টেম্বর।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, সেপ্টেম্বরের মধ্যে খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর আইন-বিধি অনুযায়ী, ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে গেজেট প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব আরও জানান, গেজেট প্রকাশের পরও সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর কোনো ভোটকেন্দ্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অধীনে বা নিয়ন্ত্রণে থাকলে তা সরেজমিন যাচাই করে রিটার্নিং অফিসার জরুরি ভিত্তিতে কমিশনকে জানাবেন। তখন বিষয়টি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে ১০ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি ভোটারের জন্য ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্র এবং দুই লাখ সাত হাজার ৩১৯টি ভোটকক্ষ ছিল। দশম সংসদ নির্বাচনে নয় কোটি ১৯ লাখ ভোটারের জন্য কেন্দ্র ছিল ৩৭ হাজার ৭০৭টি, তখন ভোটকক্ষ ছিল এক লাখ আট হাজার ৭৮টি। নবম সংসদ নির্বাচনে আট কোটি ১০ লাখ ভোটারের জন্য কেন্দ্র ছিল ৩৫ হাজার ২৬৩টি এবং ভোটকক্ষ ছিল এক লাখ ৭৭ হাজার ২৭৭টি।