পাহাড় থেকে সমতল, উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা বৃষ্টির তাণ্ডবে বিপর্যস্ত। একাধিক শহর জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। রাস্তা, নদী, নালা, খাল, বিল আলাদা করে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে বইছে। এমন অবস্থায় দিল্লিতে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিন দিনে দেশটিতে নিহত হয়েছে প্রায় ৪০ জন।
সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২০৫ দশমিক ৩৩ মিটার বিপদ চিহ্ন ছুই ছুই করছিল যা আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে ২০৬ দশমিক ২৪ মিটার বিপৎসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নদীটি প্রত্যাশার থেকে অনেক আগে বিপৎসীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। খবর এবিপির
বন্যার ঝুঁকিতে থাকা নিচু এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের শহরের বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ শিবির ও কমিউনিটি সেন্টারে পাঠানো হবে। দিল্লি সরকার বন্যা-প্রবণ এলাকা এবং যমুনা নদীর জলস্তর নিরীক্ষণের জন্য ১৬ টি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জলাবদ্ধতার সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দিল্লিতে এত তীব্র বৃষ্টি হয়েছে। ১৯৮২ সালে এমন বৃষ্টি হয়েছিল যেখানে ২৪ ঘণ্টায় ১৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা এমন চরম বৃষ্টি সহ্য করার মতো তৈরি করা হয়নি।
বিপৎসীমার ওপর বইছে যমুনা নদীর পানি
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মির, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানে আরও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে প্রায় সমগ্র উত্তর ভারত বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, সেনাবাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোতে ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করতে পদক্ষেপ নিয়েছে। এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি নদীতে ভাটা পড়েছে। শহরের অনেক রাস্তা ও ভবন হাঁটু পানিতে ডুবে আছে।
নদী ও স্রোতের জলস্তর বিপৎসীমা অতিক্রম করায় উত্তরাখণ্ডে অবিরাম বর্ষণ এবং ভূমিধসের কারণে বেশ কয়েকটি রাস্তা ও মহাসড়ক অবরুদ্ধ হয়েছে। রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার বেশ কয়েকটি অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নিচু এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা এবং বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হিমাচল প্রদেশ। ভূমিধস, বন্যা এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে ঘরবাড়িসহ শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।