পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের বড় ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্প (বিআরএসপি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যার সঙ্গে আমাদের দেশের কিছু বাঘাবাঘা ব্যক্তি জড়িত ছিল। এজন্য আমি শুধু বিশ্ব ব্যাংককে দোষারোপ করি না। এটা একটি বড় ভুল বোঝাবুঝি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বব্যাংক থেকে যে সম্মান দেখিয়েছে এবং বাজেটে যে সহযোগিতা করেছে, তার জন্য বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান তিনি।
সুদূরপ্রসারী ভাবনা নিয়ে সরকার এগোচ্ছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাজেট সহায়তায় যে পরিমাণ ফান্ডিং তারা করেছে- আজকে একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রোজেক্ট। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, এটা একটা বিরাট অর্জন। আমাদের ভাবনা অনেক সুদূরপ্রসারী। কিন্তু বাস্তবায়ন খুবই ধীর।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা যতই পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, একদিনে এক শ সেতু উদ্বোধন করি তারপরও যখন দুর্ঘটনায় খবর দেখি, তখন মনটা বিষণ্ন হয়ে যায়। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনার। আমরা মন্ত্রী হলেও তো মানুষ। এ বিষণ্নতার এই দুর্ঘটনা আমাদের মনে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এতো মেগা প্রোজেক্ট, এতো উন্নয়ন করার পরও স্বস্তি পাচ্ছিলাম না, এই দুর্ঘটনার কারণে। কেন হবে? আমরা কি এটা এড়াতে পারি না? আমরা এত কিছু করতে পারি, আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারি, এটা কেন পারব না?
সেতুমন্ত্রী বলেন, এটাই হচ্ছে আজ প্রশ্ন। বিশ্ব ব্যাংক এখানে পাঁচ হাজার কোটি টাকার মধ্যে বেশিরভাগ তারাই ফান্ডিং করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কথা বলি কাজ করি না। নানাভাবে কাজ বিলম্বিত হয়। কাজেই বিশ্বব্যাংকের যে ফান্ডিং, যে প্রোজেক্টের জন্য, এ কাজটি আমরা শপথ নেই, বাস্তবায়নটা যথাসময়ে না হলে দেশের মানুষ বিরক্ত হবে। আমাদের আর সময় নষ্ট করার মত সময় নেই। আমাদের যত দ্রুত সম্ভব কাজে হাত দিতে হবে। আজকে একটা বাস্তবতা আছে, আমাদের চার পাশে। যুদ্ধ, ক্লাইমেট চেঞ্জ। আমাদের প্রথম কাজ হবে আমাদের লোকজনকে বলতে হবে, আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে। এই কাজটা আমাদের আগে করতে হবে৷ যে মানুষগুলোর জন্য আমরা এত কিছু করছি, তাদের তো জীবিকার জন্য রাস্তায় যেতে হবে। সেখানে তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে৷ এটা গুরুত্বপূর্ণ।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সড়ক বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল (পরিবহন) প্র্যাকটিস ম্যানেজার ফেই ডেং। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রথম অংশের স্বাগত বক্তব্য দেন- সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। সড়কের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অপরাধ ও অপারেশন) মো. আতিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার।